স্পেনের সেভিলে একটি মসজিদ এবং ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে। ৭০০ বছরের মধ্যে এই শহরটিতে প্রথম নির্মিত মসজিদ হবে।মহৎ লক্ষ্যে যোগদানের জন্য সবাইকে আমন্ত্রন জানানো হয়েছে। ৩০,০০০ হাজার মুসলিমের জন্য একটা স্থায়ী মসজিদ প্রয়োজন। Kanoute 4 seville Mosque নামে ক্যাম্পেইন চলছে। মসজিদ তৈরিতে বাজেট ধরা হয়েছে ১,০০০,০০০০ ডলার এখন পর্যন্ত ৭৯৭,২১৩ ডলার তহবিলে জমা হয়েছে।
২০০৭ সালে, ফুটবলার ফ্রেডেরিক ওমর কানৌতে সেভিলের মুসলিম সম্প্রদায়কে একটি মুসাল্লাহ কিনে সহায়তা করেছিলেন। এটি রূপান্তরিত বাণিজ্যিক ইউনিট যা এখন পর্যন্ত শহরের মুসলমানরা নামায পরে থাকে। সেই থেকে মুসলিম সমাজ বড় হয়ে উঠেছে এবং এর সাথে মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি মর্যাদাপূর্ণ মসজিদ থাকার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে । এর ফলে কানৌতে মসজিদ তৈরির প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হতে সহায়তা করতে এই প্রচারে যোগদান করেছেন।
টিভিতে আজকের খেলা কার, কখন দেখতে
স্পেনে ইসলামের মহান উত্তরাধিকার আজও প্রতিটি শহরে রয়েছে এবং যা প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ দর্শককে আকর্ষণ করে। ইতিহাসের এই সময়কালের (আল-আন্দালুস) বিজ্ঞান, কলা, দর্শন এবং সাধারণভাবে সমাজের অবদান লক্ষণীয়। প্রসঙ্গটি এখন স্পষ্টতই পৃথক, এবং এই মসজিদ এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উভয়ই মুসলমানদের ধর্মীয় চাহিদা পূরণ করে একটি ইতিবাচক অবদান এবং অমুসলিম সহ সম্প্রদায়ের সকল সদস্যের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এইভাবে মুসলিম ও ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারণা দূর করতে সহায়তা করবে।
সারা বিশ্বের মুসলমানদের জন্য আন্দালুসিয়া একটি স্বপ্নের নাম, যা প্রতি বছর মিলিয়ন মিলিয়ন আন্তর্জাতিক দর্শককে আকর্ষণ করে। এই দর্শনার্থীদের একটি বড় একটা অংশ মুসলমান। মুসলমানদের নামাজ পড়ার জন্য শহরে কয়েকটি রূপান্তরিত ছোট ছোট জায়গাগুলি রয়েছে, তবে সেখানে কোনও উদ্দেশ্যমূলক নির্মিত মসজিদ নেই যাতে মুসলমানরা মর্যাদাপূর্ণ উপায়ে নামাজ পড়তে পারে।
মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি এইভাবে কেবল স্থানীয় মুসলমানদের ধর্মীয় চাহিদা পরিবেশন করে এটি একটি বৈশ্বিক কেন্দ্রও হয়ে উঠবে,এখানে প্রতিবছর বেড়াতে আসা কয়েক হাজার মুসলিম এবং অমুসলিম পরিদর্শন করে থাকে। যেহেতু সেভিলের বেশিরভাগ মুসলমান হ’ল প্রথম প্রজন্মের অভিবাসীরা খুব সীমিত আয় করে থাকে। মসজিদ এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের ব্যয় তাদের সাধ্যের বাইরে – এজন্য সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে সহয়তা চাওয়া হয়েছে ।
সেভিল মসজিদ ফাউন্ডেশন ২০০৪ সালে সেভিলিতে একটি মসজিদ এবং ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিবন্ধিত হয়েছিল। গত পাঁচ বছর ধরে, সেভিল মসজিদ ফাউন্ডেশন উদ্দেশ্য-নির্মিত মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রকল্পে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে।
ফ্রেডেরিক ওমর কানৌতে কিভাবে মহান কাজে নিজেকে জড়ালেন :
ফুটবল বিশ্বে আমরা অনেক খেলোয়াড় দেখেছি ক্লাবের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ক্লাবের সাথে আন্তরিক সুসম্পর্ক রাখতে। নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন ক্লাবের আইকনিক খেলোয়াড় হিসাবে। লিভারপুলের স্টিভেন জেরার্ড চেলসি ল্যাম্পার্ড এবং টেরি। এসি মিলানের মালদিনি বার্সার জাভি মেসি সহ অনেক খেলোয়াড় আছেন যারা ক্লাবের সাথে নিজের নাম জড়িয়ে নিয়েছেন তাদের ক্লাবের প্রতি তাদের ডেডিকেশনের মাধ্যমে।
আজকে আমরা একজন প্রাক্তন পেশাদার ফুটবলার নিয়ে কথা বলব যিনি ইউরোপের শীর্ষ লিগগুলিতে খেলেছিলেন এবং একসময় আফ্রিকার সেরা খেলোয়াড় হিসাবে প্রশংসিত হয়েছিল।আন্তর্জাতিকভাবে মালির প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন এবং শীর্ষ স্তরের ক্লাব সেভিলার হয়ে সাত বছর খেলেছিলেন।
বর্তমানে তিনি আলোচনায় এসেছেন সেভিল মসজিদ এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের তহবিল সংগ্রহের পেছনে রয়েছেন তবে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে তার সংযোগ এক দশক ধরে ফিরে এসেছে।আজকে তাকে নিয়া লিখার কারন তার খেলোয়ারি জীবন না ইসলাম ধর্মের প্রতি তার খেদমত নিয়ে।
ফ্রেডি কানৌটের ক্লাবের হয়ে স্পেনে অর্জন :
২০০৬ উয়েফা কাপ, ২০০৬ ইউরোপীয়ান কাপ ,২০০৭ উয়েফা কাপ ,২০০৭ স্পেনিশ কাপ ,২০০৭ স্পেনিশ সুপার কাপ, ২০০৭ আফ্রিকান ফুটবল অফ দ্যা ইয়ার, ২০১০ স্পেনিশ কাপ।
ফ্রেডিরিক উমর বলেন ” আমি সেভিলায় পৌছার আগে কল্পনা করেছিলাম আমি এমন যায়গা দেখতে পাব যেখানে আমরা সহজেই এক বা দুইটি মসজিদ খুঁজে পেতে পারি কারণ আমি আন্দালুসিয়ার অতীত সম্পর্কে জানতাম এবং আমি ভেবেছিলাম যে এখনও এই সংস্কৃতির কিছু অবশেষ রয়েছে। তবে আমি যখন পৌঁছেছিলাম তখন আমি দেখতে পেলাম যে এগুলো ভবনের আকারের মতোই ছিল।
আপনি এখনও দেখত পাবেন অনেকগুলি ক্যালিগ্রাফি যা একটি মিনার ছিল [সেভিলে গ্রেট ঐতিহাসিক মহান মসজিদের]। আপনি এখনও জিরালদার দরজায় ক্যালিগ্রাফি দেখতে পাচ্ছেন, উদাহরণস্বরূপ -রাস্তার নাম, কিছু আরবি নাম রয়েছে, যাতে আপনি ইতিহাসের সম্পর্কে ধারনা করতে পারবেন।
স্থানীয় মুসলমানরা সেভিলের পোনস ডি লিওন অঞ্চলে আবাসিক ভবনে নামাজ পড়ত।এই আবাসিক ভবনটি বিক্রি হয়ে যাওয়ার ঝুকিতে ছিল। সেভিলের পোনস ডি লিওন অঞ্চলে আবাসিক ভবন সংরক্ষন করার জন্য ২০০৭ সালে তিনি ৭০০,০০০ ডলার প্রদান করেছিলেন। এখন তিনি মসজিদ এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মানের তহবিল সংগ্রহের পেছনে রয়েছেন স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে।
ফ্রেডিরিক ওমর বলেন “আমি এখানে থাকাকালীন সময়ে, আমি দেখেছি যে এখানে মসজিদের প্রয়োজনীয় ছিল এবং সেই জায়গাটি ঝুঁকির মধ্যে ছিল। তাই আমি মুসলমানদের সহায়তা করার জন্য যা প্রয়োজন তাই করেছি।
‘কানৌট ৪ সেভি মসজিদ” প্রচারটি গত বছর শুরুর পর থেকে এক মিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৭৯৭,২১৩ জোগাড় করেছেছেন। কানৌট বলেন ” ফুটবল সবসময় আমার আবেগ ছিল, আমি সর্বদা ফুটবল খেলা পছন্দ করি। এটা আমার ক্যারিয়ার হয়ে গেছে। ফ্রান্সে বড় হওয়া ৪২ বছর বয়সী মিঃ কানৌট বলেছেন-
“যেদিন আমি আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করব সেদিন আমার ক্যারিয়ারে আমি কতটি লক্ষ্য অর্জন করেছি সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে না। ”
২০০৭ সালে আফ্রিকার ফুটবলার নির্বাচিত হন মিঃ কানৌতে |
অনুবাদ- এমডি লিখন বিন ইউসুফ
[…] ৭০০ বছর পর সেভিয়ায় মসজিদ […]