শুরুর গল্পটা সবারই জানা।
রোজারিওর এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম,তারপর এগারো বছর বয়সে দুরারোগ্য হরমোন রোগে আক্রান্ত হওয়া, ট্রায়ালে বার্সেলোনার ক্রীড়া পরিচালক কার্লোস রেক্সাসকে মুগ্ধ করা,সাথে সাথেই টিস্যু পেপারে সই করিয়ে নেয়া। আর বাকিটা যেমনটা বলা হয় ইতিহাস………
নিজ দলের কোচ প্রিয় শিষ্যের ক্ষমতা বোঝাতে গিয়ে বিশেষণহীন হয়ে পড়েন, বিপক্ষ দলের কোচ সে মানুষ না প্লে-স্টেশনের খেলোয়াড় হিসেবে রায় দিয়ে দেন। কারো মতে জাদুকর কারো মতে শিল্পী। কেউ বলেন মেসিডোনা, কেউ বলেন মেসাইয়াহযীশু। আর পাঁচ ফুট সাড়ে ছয় ইঞ্চির চিরকালের লাজুক চোখে শিশুর মতো কৌতুহল নিয়ে তাকিয়ে বলে-
আমি আর কেউনা আমি মেসি, শুধুই লিওনেল আন্দ্রেস মেসি।
মেসি কত গোল করেছেন, কত গোল করিয়েছেন, এসব কাগুজে হিসেব তাকে পরিসংখ্যানের ভাষায় হয়তো তাকে সেরা করে তুলবে,কিন্তু দিনের পর দিন, ছোট্ট জাদুকরের দেখানো পায়ের জাদুকে কিভাবে বর্ননা করবে! গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে গোল করতে মেসির জুড়ি নেই।
২০০৯ ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে ক্রস থেকে মাথা না ছু্ঁইয়ে সবাইকে বোকা বানিয়ে বুক দিয়ে গোল, (যেটাকে পরে কোচ গার্দিওলা বলেছিলেন, Messi Scored That Goal With His Heart) দুইটি চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে ম্যাচজয়ী গোল, প্রথম এল-ক্লাসিকোতে হ্যাট্রিক, এমন প্রায় প্রতিটি যায়গাতেই রেখেছেন নিজের পায়ের পরশ।
২০০৭ গেটাফের সাথে ৬২ মিটার দুর থেকে দৌড় শুরু করে ৬ জনকে কাটিয়ে ম্যারাডোনাকে মনে করিয়ে দেয়া সেই গোল মেসির আগমনী গান শুনিয়েছিল সবাইকে।
ক্রিষ্টিয়ানো রোনালদোকে নিয়ে পড়তে..
ম্যান টু ম্যান মার্কিং করে কখনো মেসিকে আটকানো সম্ভব হয়নি,তাই ডিফেন্ডাররা একটু নির্মমই থাকেন মেসির প্রতি। নীল চোখের পাওলো মালদিনি কিংবা ব্লাক স্পাইডার খ্যাত লেভ ইয়াসিন কখনো বিশ্বকাপ জিতেনি, কিন্তু সর্বকালের সেরা একাদশে এই দুজনের নাম না রাখলে আপনার ফুটবল জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, এইরকম আরও প্রচুর উদাহরণ রয়েছে।
তেমনি বলা হয়ে থাকে একটি বিশ্বকাপে চুমো দিতে পারলেই মেসির সব ক্ষমা পেয়ে যাবে,বছরের পর বছর দর্শকের চোখের মুগ্ধতা সার্থক হবে! মেসি এমন একজন জাদুকর যে সবাাইকে মোহাচ্ছন্ন করে রাখে,যার খেলা দেখে মাঠে প্রবল প্রতিপক্ষেরও হাততালি দিতে ইচ্ছে করে।