ফুটবল বিশ্বের অন্য সব দেশের মতো জাগ্রত এক দেশ বাংলাদেশ। কিন্তু অভাব এই ফুটবল প্রিয় বাংলাদেশের প্রতিভাকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরা। বড়ই অভাব সেইরকম নীতি নির্ধারকের যারা এগিয়ে নিয়ে যাবে দেশের ফুটবল, ফিরিয়ে দিবে হারিয়ে যাওয়া সেই মোহামেডান বনাম আবাহনী ম্যাচের উচ্ছাস উদ্দিপনা।
আমরা কি সেই দেশের ফুটবল প্রেমি মানুষ নয় যে দেশ ১৯৯৩ সালে ফিফা র্যাংকিং এ ছিল ১১৬ তম স্থানে? অথচ ১৯৯৩ সালে ক্রোয়েশিয়া জাতীয় ফুটবল দলের র্যাংকিং ছিল ১২২। সময়ের ব্যবধানে সেই ক্রোয়েশিয়া আজ ফুটবল ইতিহাস গড়েছে, পেয়েছে ২০১৮ বিশ্বকাপে রানার্সআপের খেতাব। কিন্তু সেই একই সময়ের ব্যবধানে আমাদের দেশের ফুটবল কতটুকু এগিয়েছে? না এগিয়ে যায়নি বরং দিনের পর দিন বছরের পর বছর হারিয়েছে ফুটবলের সব কাব্যে লেখা ইতিহাস। ভাবতেও অবাক লাগে একসময় এই দেশেরই গৌরবময় সন্তান ছিল জাহিদ হাসান এ্যমিলি, আশ্রাফ উদ্দিন, মোমেন মুন্নার মতো খেলোয়াড়রা। আজ সেই লিজেন্ডদের দেশের ফুটবল উপহাসের পাত্র। বর্তমান জেনারেশনের অনেক মানুষই জানেন না বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসের এই সেরা ফুটবলাদের নাম।
আরো পড়ুন- কে হতে পারতো এবারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী?
দেশে ফুটবলের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা না থাকায় অনেকে পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশের মাটিতে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। আমরা হারিয়েছি আমাদেরই হাতে গড়া প্রতিভা হামজা চৌধুরিকে, হারিয়েছি ফরিদ আলী, সামেজ সোম, জিদান মিয়ার মতো প্লেয়ারদের। সবাই কিন্তু স্বার্থপর হননি, দেশেমাতৃকার মাটির মিষ্টি গন্ধ আর বুক ভরা ভালোবাসায় ছুটে এসেছেন সুদূর ডেনমার্ক থেকে জামাল ভূঁইয়া। ফিরে এসেছেন কাজী তারিক রায়হান, ফিনল্যান্ডের টপ ক্লাব ইলভেস ট্যাম্পেরের হয়ে ইউরোপা লিগের বাছাইপর্বে একটি ম্যাচে খেলার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। ফিরে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সঞ্জয় চৌধুরি ও সুইডেন থেকে জোসেফ নূর । তারা কি পারবেন এই দূর্দশার লাগাম টেনে ধরতে??
আজ এত বছরের ফুটবল ইতিহাসে এখনো বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের জন্য ভালো কোনো জিমনেশিয়াম নেই। দেশের কোথাও নেই টপ ক্লাস একাডেমি। তাহলে আমাদের দেশ থেকে কিভাবে বের হয়ে আসবে প্রতিভা? এই রকম থার্ডক্লাস ফুটবল ব্যবস্থার দেশে কিভাবে ফরিদ,হামজাদের ফিরে পাওয়ার আশা করা যায়?
কেন এত অধঃপতন দেশের ফুটবলের? এর পেছনে দায়ী কারা? কেন তাদের মুখোশ উন্মোচন হচ্ছেনা? এরকম হাজারো প্রশ্ন জেগে আছে বাংলার কোটি ফুটবল ভক্তর মনে। সর্বশেষ একটাই আশা একদিন ঠিকই ফিরে আসবে বাংলায় সেই রোমাঞ্চকর ফুটবলের মুহুর্ত। সেদিন থাকবেনা কোনো দূর্নীতিবাজ আর পেটপূজারির ঠাই। অপেক্ষায় আছে সেই ক্ষনের কোটি ভক্ত আর আশায় রয়েছে বিশ্বকাপ মঞ্চে লাল-সবুজের পতাকা বাহক হবে।