২০ বছর আগে ২০০০ সালের আজকের এই দিনে ২৬ জুন আন্তর্জাতিক টেস্ট খেলার মর্যাদা লাভ করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ২০০০ সালের ২৬ জুন টেস্ট স্ট্যাটাস পেলেও অভিষেক টেস্ট খেলতে নামে স্ট্যাটাস পাওয়ার ৪ মাস ১৮ দিন পর।
২০০০ সালের ১৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ক্রিকেট দল নাইমুর রহমান দুর্জয়ের অধিনায়কত্বে প্রথম আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেট অঙ্গনে পা রাখে। ভারতের বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে অভিষেক টেস্টেই সেঞ্চুরি (১৪৫) করে অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ব্যানারম্যান ও জিম্বাবুয়ের ডেভিড হটনের পাশে নাম লেখান আমিনুল ইসলাম।
অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়ের ১৩২ রানে ৬ উইকেট অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসে কোনো বোলারের সেরা বোলিং। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণে বাংলাদেশ ৯ উইকেটে হেরে যায়। পরবর্তীতে ২০০১ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বোর এসএসসিতে অভিষেক টেস্টে ১৭ বছর ৬১ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করে রেকর্ড গড়েন মোহাম্মদ আশরাফুল। ২০০৩ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে করাচি টেস্টে প্রথমবারের মতো প্রথম ইনিংসে লিড নেয় বাংলাদেশ। মুলতানে তৃতীয় ও শেষ টেস্টে জিততে জিততে ১ উইকেটে হেরে বসে তারা।
এই সিরিজে বাংলাদেশের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম হ্যাট্রিক করে অলোক কাপালি। টানা ২১ টেস্ট হারার পর হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে ২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে ২য় টেস্টে ড্র করতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ যদিও খারাপ আবহাওয়ার কারণে ৩দিন খেলা বন্ধ থাকে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০০৪ সালে সেন্ট লুসিয়া টেস্টে তিন ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরির কল্যাণে প্রথম নিজেদের কৃতিত্বে ড্র করে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে হাবিবুল বাশার ও মোহাম্মদ রফিকের পর দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন খালেদ মাসুদ। চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম জয় পায় বাংলাদেশ ২০০৫ সালে। ম্যাচ সেরা হন এনামুল হক জুনিয়র। সিরিজের অপর টেস্টটিও অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়।টেস্ট ইতিহাসে প্রথম সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ।
২০০৬ সালে প্রথম ইনিংসে ১৫৮ রানের লিড নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়েও শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩ উইকেটে পরাজয় হয় বাংলাদেশের। ২০০৯ সালে দেশের বাইরে প্রথম টেস্ট জয় বাংলাদেশের। শীর্ষস্থানীয় সব খেলোয়াড় ধর্মঘটে যাওয়ায় নতুন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দুই টেস্টেই জয় পায় বাংলাদেশ। এভাবেই হার ড্র আর মাঝেমধ্যে জয়ের মধ্যদিয়েই টেস্ট ক্রিকেটে ২০ বছর পূর্ণ করলো বাংলাদেশ।
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর এই ২০ বছরে বাংলাদেশ টেস্ট দল এখনো রয়ে গেছে অপরিপক্ক দল! এই ২ দশকে বাংলাদেশ দল টেস্ট ম্যাচ খেলেছে ১১৯ টি, এর মধ্যে জিতেছে মাত্র ১৪ টি, হেরেছে ৮৯ টি, ড্র করেছে ১৬ টি, শতকরা জয়ের হার ১১.৭৬% ।
দেখে নেওয়া যাক টেস্টে বাংলাদেশের দলীয় সর্বোচ্চ ইনিংস গুলো:
★৬৩৮ (গল) ★৫৯৫/৮ ডিক্লেয়ার (ওয়েলিংটন) ★৫৫৬ (মিরপুর) ★৫৫৫/৭ ডিক্লেয়ার (খুলনা)
ব্যাটিং পরিসংখ্যানঃ
টেস্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীদের নামঃ
★মুশফিকুর রহিম: ৪৪১৩ রান, ★তামিম ইকবাল: ৪৪০৫ রান, ★সাকিব আল হাসান: ৩৮৬২ রান, ★হাবিবুল বাশার: ৩০২৬ রান, ★মমিনুল হক: ২৮৬০ রান
ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যানদের নামঃ
★মুশফিকুর রহিম: ২১৯* রান (প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে) ★সাকিব আল হাসান: ২১৭ রান (প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড) ★তামিম ইকবাল: ২০৬ রান (প্রতিপক্ষ পাকিস্তান) ★মুশফিকুর রহিম: ২০৩* রান (প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে) ★মুশফিকুর রহিম: ২০০ রান (প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা)
সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড় কাদেরঃ
★মমিনুল হক: ৪০.৮৫, ★সাকিব আল হাসান: ৩৯.৪০, ★তামিম ইকবাল: ৩৮.৬৪, ★মুশফিকুর রহিম: ৩৬.৭৭, ★নাসির হোসেন: ৩৪.৮০
সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিক কে এবং কতটিঃ
★মমিনুল হক: ৯ টি, ★তামিম ইকবাল: ৯ টি, ★মুশফিকুর রহিম: ৭ টি, ★মোহাম্মদ আশরাফুল: ৬ টি, ★সাকিব আল হাসান: ৫ টি
সর্বোচ্চ হাফ সেঞ্চুরির মালিক কে এবং কতটিঃ
★তামিম ইকবাল: ২৭ টি, ★সাকিব আল হাসান: ২৪ টি, ★হাবিবুল বাশার: ২৪ টি, ★মুশফিকুর রহিম: ২১ টি, ★মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ: ১৬ টি
সর্বোচ্চ ডাল সেঞ্চুরির মালিক কে এবং কতটিঃ
★মুশফিকুর রহিম: ৩ টি, ★সাকিব আল হাসান: ১ টি, ★তামিম ইকবাল: ১ টি
সর্বোচ্চ ছক্কার মালিক কে এবং কতটিঃ
★তামিম ইকবাল: ৩৫ টি, ★মোহাম্মদ রফিক: ৩৪ টি, ★মুশফিকুর রহিম: ৩১ টি, ★মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ: ২৩ টি, ★মাশরাফি বিন মোর্তজা: ২২ টি, ★মোহাম্মদ আশরাফুল: ২২ টি
সর্বোচ্চ চারের মালিক কে এবং কতটিঃ
★তামিম ইকবাল: ৫৫১ টি, ★মুশফিকুর রহিম: ৫৩৪ টি, ★সাকিব আল হাসান: ৪৭৫ টি, ★হাবিবুল বাশার: ৪০১ টি, ★মোহাম্মদ আশরাফুল: ৩৩৫ টি
এক সিরিজে সর্বোচ্চ রানের মালিক কে এবং কতটিঃ
★হাবিবুল বাশার: ৩৭৮ রান, ★মমিনুল হক: ৩৭৬ রান, ৩২১ রান, ৩১৪ রান, ★তামিম ইকবাল: ৩০৮ রান
বোলিং পরিসংখ্যানঃ
সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীদের নামঃ
★সাকিব আল হাসান: ২১০ উইকেট, ★তাইজুল ইসলাম: ১১৪ উইকেট, ★মোহাম্মদ রফিক: ১০০ উইকেট, ★মেহেদী হাসান মিরাজ: ৯০ উইকেট, ★মাশরাফি বিন মোর্তজা: ৭৮ উইকেট
সেরা বোলিং ফিগারঃ
★তাইজুল ইসলাম: ৮/৩৯, ★সাকিব আল হাসান: ৭/৩৬, ★মেহেদী হাসান মিরাজ: ৭/৫৮, ★এনামুল হক জুনিয়র: ৭/৯৫, ★শাহাদাত হোসাইন: ৬/২৭, ★মেহেদী হাসান মিরাজ: ১২/১১৭ ও ১২/১৫৯, ★এনামুল হক জুনিয়র: ১২/২০০, ★তাইজুল ইসলাম: ১১/১৭০, ★সাকিব আল হাসান ১০/১২৪
সেরা বোলিং গড়ঃ
★সাকিব আল হাসান: ৩১.১২, ★মেহেদী হাসান মিরাজ: ৩৩.১২, ★তাইজুল ইসলাম: ৩৩.১৭, ★এনামুল হক জুনিয়র: ৪০.৬১, ★মোহাম্মদ রফিক: ৪০.৭৬
সেরা ইকোনমি রেটঃ
★এনামুল হক: ২.৭৬, ★মোহাম্মদ রফিক: ২.৭৯, ★সাকিব আল হাসান: ৩.০১, ★এনামুল হক জুনিয়র: ৩.০১, ★সোহাগ গাজী: ৩.০৪
সিরিজে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ উইকেট: ★মেহেদী হাসান মিরাজ: ১৯ উইকেট, ★এনামুল হক জুনিয়র: ১৮ উইকেট, ★সাকিব আল হাসান: ১৮ উইকেট, ★তাইজুল ইসলাম: ১৮ উইকেট, ★মোহাম্মদ রফিক: ১৭ উইকেট
উইকেট কিপিং পরিসংখ্যানঃ
সর্বোচ্চ ডিসমিসাসঃ
★মুশফিকুর রহিম: ১১৩ টি, ★খালেদ মাসুদ: ৮৭ টি, ★লিটন দাস: ২৭ টি, ★নুরুল হাসান সোহান: ৮ টি, ★ইমরুল কায়েস: ৫ টি
সর্বোচ্চ ক্যাচঃ
★মুশফিকুর রহিম: ৯৮ টি, ★খালেদ মাসুদ: ৭৮ টি, ★লিটন দাস: ২৫ টি, ★নুরুল হাসান সোহান ৫ টি, ★ইমরুল কায়েস: ৫ টি
ইনিংসে সর্বোচ্চ স্টাম্পিংঃ
★মুশফিকুর রহিম: ১৫ টি, ★খালেদ মাসুদ: ৯ টি, ★নুরুল হাসান সোহান: ৩ টি, ★লিটন দাস: ২ টি, ★মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, শাহরিয়ার হোসাইন, মোহাম্মদ ছলিম ১ টি করে
ফিল্ডিং পরিসংখ্যানঃ
সর্বোচ্চ ক্যাচঃ
★মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ: ৩৮, ★ইমরুল কায়েস: ৩০, ★মমিনুল হক: ২৯, ★মোহাম্মদ আশরাফুল: ২৫, ★সাকিব আল হাসান: ২৪
অন্যান্য পরিসংখ্যানঃ
সর্বোচ্চ ম্যাচ:
★মুশফিকুর রহিম: ৭০ টি, ★মোহাম্মদ আশরাফুল: ৬১ টি, ★তামিম ইকবাল: ৬০ টি, ★সাকিব আল হাসান: ৫৬ টি, ★হাবিবুল বাশার: ৫০ টি
অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ ম্যাচঃ
★মুশফিকুর রহিম: ৩৪ টি, ★হাবিবুল বাশার: ১৮ টি, ★সাকিব আল হাসান: ১৪ টি, ★মোহাম্মদ আশরাফুল: ১৩ টি, ★খালেদ মাসুদ: ১২ টি